ইরানে যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালাবে এটা এখন মোটামুটি নিশ্চিত

মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ইরানে হামলার প্রসঙ্গে বলেন,"যদি ইরান চুক্তি না করে, তাহলে বোমা হামলা হবে - এবং এমন বোমা হামলা চালানো হবে যা তারা আগে কখনও দেখেনি"। উল্লেখ্য তিনি এখানে পারমাণবিক চুক্তির কথা বলেছেন যা পত্র মারফত যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রসাশন কিছু দিন পূর্বে ইরানকে পাঠিয়েছিলো এবং ইরান প্রথমে সেই পত্র পাওয়ার কথা অস্বীকার করার পরে অনেকটা তাচ্ছিল্য করে ওমানের সালতানাতের মাধ্যমে জবাব দিয়ে প্রত্যাখ্যান করে। এদিকে আজ ইরানের আয়াতোল্লাহ খামেনিকে এসভিডি (দ্রাগুনোভ) আগ্নেয়াস্ত্র হাতে করে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের ভাষণ দিতে দেখা যায়। এই অস্ত্র দিয়ে তিনি ইরান-ইরাক যুদ্ধে প্রশিক্ষিত হয়েছিলেন। ইরানীয় জেনারেলরাও প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে হুমকি দিয়েছে। এ থেকে নিশ্চিতভাবে বলা যায় যুক্তরাষ্ট্রের ইরানে হামলা অবশ্যম্ভাবী এবং সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

সামরিক দিক দিয়ে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় দিয়েগো গার্সিয়া দ্বিপে এখন পর্যন্ত নিচের যুদ্ধবিমানগুলোর অবস্থান নিশ্চিত করা গেছে:
7 B-2 'Spirit' stealth bombers
8 B-52H 'Stratofortress' bombers
7 Boeing C-17 'Globemaster' lll
10 Boeing KC-135 'Stratotankers'
1 P-8A 'Poseidon'

উল্লেখ্য এতগুলো অত্যাধুনিক বোমারু বিমান গত ৪০ বছরে ব্যবহার করার নজির বিরল। এগুলো দিয়ে ইরানের ভূগর্ভস্থ সামরিক ঘাটি ও পারমানবিক সক্ষমতাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।




এদিকে যদিও সৌদি আরব, কুয়েত ও কাতার ইরানকে জানিয়েছে তারা তাদের দেশে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাটি থেকে ইরানে হামলা চালাতে দিবে না, যুক্তরাষ্ট্র ১৩ টি U.S. C-17A Globemaster III করে কাতারে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সমরাস্ত্র পরিবহণ করেছে। ইরান তাদের ভূগর্ভস্থ সামরিক ঘাটিতে ক্ষেপনাস্ত্র উৎক্ষেপণ করার জন্য প্রস্তুত করে রেখেছে। ইরানে যুক্তরাষ্ট্র কতৃক যেকোনো হামলার জবাবে ইরান মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত মোট ৬০,০০০ মার্কিন সৈন্য ধারণকারী সামরিক ঘাটিতে হামলা চালাতে প্রস্তুত। দিয়াগো গার্সিয়াতে হামলা চালাতে না পারলেও মধ্যপ্রাচ্যের সকল মার্কিন সামরিক ঘাটিগুলো যে লন্ডভন্ড হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

ইরান-যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ শুরু হলে বৈশ্বিক অর্থনীতি অচল হয়ে পড়বে। কেননা হরমুজ প্রণালী, যা ইরানের আঙিনা বলা যেতে পারে, দিয়ে বিশ্বের ২০-৩০ শতাংশ জ্বালানি সরবরাহ করা হয়। এ বাদে লোহিত সাগরে নৌ চলাচল হুথিরা আগে থেকে সীমিত করে রাখলেও যুদ্ধ শুরু হলে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে। আরব দেশগুলোর জ্বালানি ভান্ডারে হামলা চালানোর সম্ভাবনা অনেক বেশি। বলা হয় ইরান মাত্র কয়েক দিনের মাঝে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করে ফেলতে সক্ষম। যুদ্ধাবস্থায় পারমাণবিক শক্তিধর হওয়া মঙ্গলজনক হবে না।

আগেও বলেছি এখনও বলছি, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরান হামলা করে সেটা হবে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের অন্যতম সামরিক ব্যর্থতা এবং পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরু হলে গোটা পৃথিবীর জন্য চরম বিপর্জয় অপেক্ষা করছে।

-ফাহিম কবির
৩১/০৩/২০২৫

Comments

Popular posts from this blog

সুন্দর এ বসুধা।

কেন ডাক্তার হতে চাই?

New Ottoman Empire.